লিখিত পরীক্ষার খাতায় লেখার কৌশল - Daily Job Study

Latest

Wednesday, January 1, 2020

লিখিত পরীক্ষার খাতায় লেখার কৌশল

লিখিত পরীক্ষার জন্য যে তথ্য আহরণ বা পড়াশোনা করেছেন, তার মূল লক্ষ্য হলো পরীক্ষার খাতায় চমৎকারভাবে উপস্থাপন করে আসা।
আর এটি যদি করতে ব্যর্থ হন, তবে সব পরিশ্রম বৃথা যাবে।
কারণ, পরীক্ষক আপনার জানার চেয়ে খাতায় কীভাবে উপস্থাপন করেছেন তা দেখে নম্বর দেবেন।
ছোটখাটো ভুল হয়তো আপনার স্বপ্নকে ব্যাহত করতে পারে।
তাই তাঁকে সন্তুষ্ট করে আসা জরুরি।

এ জন্য সতর্ক থাকতে হবে। অনেক তো পড়াশোনা হলো এবং ভালোই তথ্য আছে বা মাথায় নিয়েছেন।
এবার সঠিকভাবে তা খাতায় দিয়ে আসতে হবে এবং খাতার অঙ্গসজ্জা ঠিকমতো করতে হবে।
তবেই হবে পরিশ্রম শতভাগ সার্থক।
এ ব্যাপারে নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করতে পারেন:
 ক. খাতায় কালো, নীল এবং ক্ষেত্রবিশেষে পেনসিল ছাড়া আর কোনো কালির দাগ থাকবে না। অনেকে সবুজ, বেগুনি, গোলাপি রং ব্যবহার করেন, যা ঠিক নয়। খ. খাতাটি পেয়ে রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ তথ্যাদি পূরণ করে মার্জিন করে ফেলবেন।
অবশ্যই বক্স স্কেলিং নয়।
কারণ, এতে লেখার জায়গাটা অনেক ছোট হয়ে আসে।
ওপরে ও বাঁ পাশে এক ইঞ্চি রেখে দাগ।
এই স্কেলিং করবেন নীল কালি দিয়ে।
 গ. লুজ শিটে সময় না থাকলে মার্জিন করার প্রয়োজন নেই।
শুধু ওপরে ও বাঁয়ে ভাঁজ করে নিন।
 ঘ. লুজ শিট নিলে তার নম্বরটি প্রথমেই মূল খাতার যথাস্থানে পূরণ করে নিন। পরে মনে থাকবে না।
 ঙ. আপনার জীবনের সর্বোচ্চ গতিতে লিখবেন। লেখা যেদিকে যায় যাক।
শুধু বোঝা গেলেই হবে। দ্রু
ত লিখলে লেখা খারাপ হবে এটাই স্বাভাবিক। চিন্তার কিছু নেই।
চ. পয়েন্ট, কোটেশন ও রেফারেন্স নীল কালি দিয়ে লিখবেন এবং নীল কালি দিয়ে আন্ডারলাইন করে দেবেন।
এতে পরীক্ষক সহজে চোখে দেখবেন।
 তাঁকে দেখানোই আপনার কাজ।
 ছ. সব প্রশ্নের উত্তর করে আসবেন। সময় না থাকলে কম লিখবেন।
না পারলে আন্দাজে কিছু একটা লিখবেন।
 জ. চেষ্টা করবেন প্রশ্নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে উত্তর দিতে।
এতে খাতা দেখা সহজ হয়। তাই পরীক্ষক খুশি।
আর তিনি খুশি হলে নম্বর ভালো আসবে।
 ঝ. তবে টু দ্য পয়েন্টের উত্তরগুলো আগে দেওয়া ভালো।
যেমন ব্যাকরণের উত্তর, চিঠিপত্র, ছোট প্রশ্ন, টীকা।
তারপর বর্ণনামূলক লেখা ভালো।
 ঞ. অসম্পূর্ণ উত্তরের ক্ষেত্রে বাংলার বেলায় অ. পৃ. দ্র. এবং ইংরেজির বেলায় To be continued লেখা উত্তম।
 ট. নতুন প্রশ্ন নতুন পৃষ্ঠা থেকে শুরু করা ভালো।
তবে গুচ্ছ প্রশ্নের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না।
 ঠ. বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিষয়ে চিত্রের প্রয়োজন নেই। এখানে তথ্যের দরকার। এটিই দিন।
ড. চিঠিপত্র লেখার সময় বাঁ পাশের পৃষ্ঠা থেকে শুরু করা উত্তম এবং দুই পৃষ্ঠায় শেষ করে দেবেন।
 ঢ. মার্জিনের বাইরে কোনো লেখা হবে না। প্রশ্নের নম্বর ও কত নম্বর প্রশ্নের উত্তর লিখছেন তাও লেখা যাবে না।
এমনকি একটা ফুলস্টপও হবে না। বোঝা গেল নিশ্চয়ই।
 ণ. অনাবশ্যকভাবে পৃষ্ঠা ভরবেন না। পৃষ্ঠা গুনে নম্বর হয় না।
যা চেয়েছে ও যা জানেন, তা সময়ের সঙ্গে মিল রেখে লিখুন।
 ত. যথাসম্ভব কাটাকাটি করবেন না।
এতে খাতার সৌন্দর্য নষ্ট হয়। সুন্দর জিনিসের দাম সর্বত্রই আছে।
তার মানে এই নয়, লেখা বাদ দিয়ে নকশা করবেন।
বুঝতে পেরেছেন আশা করি।
থ. টীকা লেখার সময় প্রথমে হালকা ভূমিকার মতো থাকবে এবং শেষে একটা সমাপনী থাকবে।
মাঝখানে যা জানতে চেয়েছে তা অল্প করে লিখে দেবেন।
 দ. যেসব প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে শব্দ নির্ধারিত থাকবে, তা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না।
 যেমন ইংরেজি রচনা।
এ জন্য পরীক্ষার হলে গুনতে বসবেন না।
বাসায় এক পৃষ্ঠা দ্রুত লিখে দেখবেন কত শব্দ হয়।
সেই সংখ্যা দিয়ে নির্ধারিত সংখ্যাকে ভাগ দিলে পৃষ্ঠা পেয়ে যাবেন।
তবে সামান্য বেশি হলে তেমন সমস্যা নেই।
যথাসম্ভব কাটাকাটি করবেন না। এতে খাতার সৌন্দর্য নষ্ট হয়।
সুন্দর জিনিসের দাম সর্বত্রই আছে।
 ধ. ৫ নম্বরের একটা প্রশ্নের উত্তর সর্বোচ্চ ২ পৃষ্ঠা হতে পারে।
এর বেশি অনেক ক্ষেত্রেই সময় পাবেন না।
 ন. এক কথায় যেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, তা যত সংক্ষেপে লেখা যায়। এখানে প্যাঁচালেই বিপদ।
 প. ইংরেজি ও বাংলা রচনা শেষে লেখাই উত্তম।
 কারণ, তা সর্বাধিক নম্বর বহন করে।
 ফ. শূন্যস্থান পূরণের ক্ষেত্রে যদি নম্বর না থেকে প্যাসেজ থাকে, তবে পুরোটা তুলতে হবে।
আর শূন্যস্থান এর নিচে নীল কালি দিয়ে আন্ডারলাইন করে দিতে হবে, যাতে পরীক্ষকের সহজে চোখে পড়ে।
 ব. লেখার সময় বানান ভুল হচ্ছে কি না মাথায় রাখবেন। যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাবেন।
সিনিয়র স্যাররা এতে খুব বিরক্ত হন।
 ভ. যেকোনো চিত্র পেনসিল দিয়ে আঁকবেন। ফ্রিহ্যান্ডে আঁকাই উত্তম।
 ম. বর্ণনামূলক প্রশ্নে পারলে ছক দিয়ে তথ্য উপস্থাপন করবেন।
ছকটা তৈরি করবেন নীল কালিতে আর লিখবেন কালো কালিতে। এতে পরীক্ষক সহজে বুঝতে পারবেন।
 য. জেলজাতীয় কালির কলম ব্যবহার না করাই উত্তম।
এতে অন্য পৃষ্ঠাও নষ্ট হয়ে যায়।
 র. ভুলক্রমে যদি কোনো পৃষ্ঠা রেখে পরবর্তী পৃষ্ঠায় লিখে ফেলেন, তবে ফাঁকা পৃষ্ঠায় একটা দাগ টেনে দেবেন।
 ল. প্রতিটি নম্বরের জন্য কত সময় পান, তা আগেই হিসাব করে রাখবেন এবং সেই পরিমাণ সময় তাতে ব্যয় করবেন।
যদি বরাদ্দকৃত সময় কিছু বেঁচে যায়, তবে তা পরবর্তী কোনো প্রশ্নে ব্যবহার করতে পারেন।
 শ. সাধারণ গণিতে উত্তর শেষ হলে একটু রিভিশন দেবেন।
অনেকেরই প্লাস, মাইনাস বা ছোটখাটো ভুল করার অভ্যাস আছে।
 একটা কথা মনে রাখবেন, এমন কোনো কাজ খাতায় করে আসবেন না বা এমন কিছু লিখবেন না বা এমন প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করবেন না, যাতে পরীক্ষকের মাথা গরম হয় বা তিনি বিরক্ত হন।
কারণ, তিনি খেপে গেলে আপনাকে বিদায় নিতে হতে পারে।
তাই সতর্ক থাকুন এবং পড়াশোনা করুন। 

No comments:

Post a Comment